পঠনপাঠনের বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতে
শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির পরামর্শ উপাচার্য সৈকত মৈত্রের
সমবেত: কালিম্পংয়ের অনুষ্ঠানে উপাচার্য ও কলেজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পড়ুয়ারা |
সময়োপযোগী বিভিন্ন পাঠ্যক্রম চালু করেছে মাকাউট.
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্রমশ পরিবর্তিত হচ্ছে পাঠ্যক্রমের
চাহিদা. সেই দিকে নজর রেখে প্রতিনিয়ত সেই তালিকায় সংযোজন হচ্ছে নিত্যনতুন কোর্সের.
যে কারণে দীর্ঘ তালিকার পেশাগত কোর্স সম্পর্কে কালিম্পংয়ের বাসিন্দারাও যেন বিশদে জানতে
পারেন এবং কলেজগুলিতে ওই কোর্সগুলি চালু হয় মূলত সেটা বোঝাতেই সম্প্রতি কালিম্পংয়ে
গিয়েছিলেন উপাচার্য সৈকত মৈত্র.
কালিম্পংয়ের রকভেল ম্যানেজমেন্ট কলেজের ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসার ড.অত্রি ভৌমিক, আইলিড কলেজের চেয়ারম্যান প্রদীপ
চোপড়া, এনএসএইচএম-এর অধিকর্তা কৃষ্ণেন্দু সরকার, আইএমএস এর অধিকর্তা ড. তাপস রঞ্জন
সরকার, টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের পক্ষ থেকে ড. অরিন্দম রায় এবং বিবিআইটি-র পক্ষ থেকে
প্রিয়াঙ্কা চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ.
রকভেল ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধিকর্তা ক্যাপ্টেন প্রকাশমণি
প্রধান মাকাউট পরিবারের সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলন করেন. সেখানে তিনি জানান, কালিম্পং
এর বিদ্যার্থী, অভিভাবকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা পেশাগত ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ মূলক
কোর্স সম্পর্কে সচেতন করার জন্যই উপাচার্য সেখানে গিয়েছিলেন. ওই অনুষ্ঠানে উপাচার্য জানান, পড়ুয়াদের মধ্যে
শিল্পোদ্যোগী মনোভাব তৈরি এবং তাঁদের চাকরির উপযোগী করে তোলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়
নিরলস কাজ করে যাচ্ছে. সমাজের সর্বস্তরে ওই বার্তা পৌঁছনোর লক্ষ্যেই মাকাউট
পরিবারের পক্ষ থেকে উপাচার্য কয়েকজনকে নিয়ে ওই অনুষ্ঠানে বার্তা দেন. রিয়েল এস্টেট
ম্যানেজমেন্ট, বায়োটেকনোলজির মতো বিভিন্ন প্রফেশনাল কোর্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন
কলেজে চালু করা হয়েছে.
পঠন-পাঠন পদ্ধতিকে আধুনিকীকরণ এবং সময়োপযোগী করার জন্য
বিশ্ববিদ্যালয় সচেষ্ট. বেকার সমস্যা সমাধানেও অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়.
অনলাইন কোর্সের ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়. যে কোনও চাকুরিজীবী বা কোনও
ব্যবসায়ী যেন ঘরে বসেই কোর্স করতে পারে সেই কথা মাথায় রেখে এই উদ্যোগ. বিশ্ববিদ্যালয়ের
নজরে রয়েছে, বিভিন্ন প্রতিযোগীতার মধ্য দিয়ে কালিম্পংয়ের পড়ুয়াদের মধ্যে থাকা উদ্ভাবনী
শক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটানো. তার ওপর ভিত্তি করেই ওই সমস্ত পড়ুয়াদের উচ্চ শিক্ষার
দিশা দেখাবে বিশ্ববিদ্যালয়. প্রসঙ্গত, কালিম্পংয়ে এই কলেজটিই একমাত্র মাকাউট
অনুমোদিত কলেজ. এই কলেজেও পেশাগত বিভিন্ন কোর্স চালু হতে চলেছে.
কালিম্পংয়ের অনুষ্ঠানে |
অভিনন্দনঃ কালিম্পংয়ের অনুষ্ঠান মঞ্চে উপাচার্য সৈকত মৈত্রের সঙ্গে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পদাধিকারীরা |
বক্তব্যঃ শিলিগুড়ির অনুষ্ঠান মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন
উপাচার্য সৈকত মৈত্র
শিক্ষাকে বাহন করার বদলে বহন করে চলায় অসন্তোষ প্রকাশ
করেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর. দোল যাত্রার আগে শিলিগুড়িতে এক আলোচনা সভায়
সেই সূত্র ধরেই সমাজের কাজে দলবদ্ধ ভাবে পড়ুয়াদের কাজে লাগানোর বার্তা দিলেন পশ্চিমবঙ্গের
মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাকাউট) উপাচার্য সৈকত মৈত্র. সৃজনশীলতা,
প্রকৌশল জ্ঞান, নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা ও ডিজিটালের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে পড়ুয়ারা
যেন শিল্প ও সমাজের উন্নতি করতে পারে, সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সেই পরামর্শ দেন
তিনি. সম্প্রতি মাকাউটের জোন 1-এর নোডাল সেন্টার টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের শিলিগুড়ি
ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এসআইটি)-তে নিউ অ্যাকাডেমিক ইকো সিস্টেম নিয়ে আয়োজিত এক
আলোচনাসভায় এই বক্তব্য রাখেন উপাচার্য.
শিলিুগুড়িতে উপাচার্যের সঙ্গে বিশিষ্টরা
অ্যাকাডেমিক ইকো সিস্টেম – এই নামের মধ্যে দিয়েই সকলকে
স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে, শিক্ষা ও সমাজের যে বাস্তুতন্ত্র রয়েছে সেটাকে রক্ষা
করতে হবে. পুকুরের বাস্তুতন্ত্রে যেমন একে অপরের পরিপূরক. ঠিক একই ভাবে শিক্ষাকে
সমাজ ও শিল্পের কাজে লাগাতে হবে. তাহলেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই অসম্তোষ মিটবে
বলে আশা শিক্ষা মহলের. ওই অনুষ্ঠানে অংশ
নেন জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, গনিখান চৌধুরী ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং
অ্যান্ড টেকনোলজি, কালিম্পংয়ের রকভেল ম্যানেজমেন্ট কলেজ, শিলিগুড়ি ইনম্পারিয়া নলেজ ক্যাম্পাস, মালদহের আইএমপিএস
কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি, শিলিগুড়ি আইআইএএস স্কুল অব ম্যানেজমেন্ট এর অধ্যাপক
ও অধিকর্তারা. অনুষ্ঠানে প্রায় 115 জন
সদস্য উপস্থিত ছিলেন.
উপাচার্য পঠন পাঠনের পদ্ধতিতে প্রযুক্তিকে আরও বেশি করে
ব্যবহার করার পরামর্শ দেন. তিনি জানান, প্রযুক্তি ও তার সাহায্যে উদ্ভাবনী শক্তিকে
কাজে লাগিয়ে পড়ুয়াদের সামগ্রিক বিকাশ করতে হবে. শিক্ষামহলের অধিকাংশই উপাচার্যের
বক্তব্যের সমর্থন করেছেন. অধিকাংশেরই মত, প্রযুক্তির সাহায্যে বর্তমানে অনেক জটিল
সমস্যারই সহজেই সমাধান করা যায়. তাই পঠন
পাঠনের পদ্ধতি হোক বা প্রয়োগ সর্বত্রই প্রযুক্তির ছাপ থাকা আবশ্যিক.এ ভাবে
উদ্ভাবনী সম্ভাবনাকে সমাজের কাজে ব্যবহার করতে পারলে মাকাউটের অধীনে থাকা 196টি
সরকারি ও বেসরকারি কলেজের প্রায় দেড় লক্ষ পড়ুয়ারা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে যে
অবদান রেখে যাবে সেটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার…
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন